ব্যক্তিগত ঋণ বা শিল্পঋণ যেটাই হোক না কেন, ব্যাংকঋণের সুদহার যত কম হবে, ততই ভালো। আমরা ব্যবসায়ীরাই চাই, সুদহার কম থাক। এতে ব্যবসা-বাণিজ্যের খরচ নিয়ন্ত্রণের মধ্যে থাকবে। আমাদের এই প্রচেষ্টার ফলেই কিন্তু ছয়-নয় কার্যকর হয়েছিল।
কিন্তু মূল্যস্ফীতির হার বাড়লে অর্থনীতির নিয়মে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে নীতি সুদহার বাড়াতে হয়। এতে ব্যাংকঋণের সুদহারও বাড়ে। আবার ব্যাংক পরিচালনার ক্ষেত্রে নানা ধরনের ব্যয় থাকে, তাদের প্রশাসনিক ব্যয় থেকে শুরু করে খেলাপি ঋণের ব্যয়ভার—সবই ঋণের সুদের সঙ্গে যুক্ত হয়। তাই এসব বিষয়েও নজর দিতে হবে। দেশের ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ কয়েক বছর ধরেই বাড়ছে। খেলাপি ঋণের এই প্রবৃদ্ধি শক্ত হাতে মোকাবিলা করা না গেলে ব্যাংকঋণের সুদহার বাড়বে, অর্থাৎ ব্যাংক ব্যবস্থাপনা উন্নত করা না গেলে এই সমস্যার সমাধান হবে না।
ভোক্তাঋণের সুদহার বাড়লে আমানতের সুদহারও বাড়বে। এতে যাঁরা সীমিত আয়ের মানুষ, তাঁদের ভালো হবে। আয় বাড়বে। এটা দরকার ছিল।
তবে শিল্পঋণে সুদহার এখনো ৯ শতাংশই আছে। এটা আমাদের জন্য ভালো। কিন্তু শেষমেশ শিল্পে ঋণের সুদহার বাড়ানোরও চাপ আসবে বলে ধারণা করি। কারণ, ব্যাংকগুলো ৭ শতাংশ বা তার চেয়ে বেশি হারে আমানত নিলে ৯ শতাংশ হারে শিল্পঋণ দিতে পারবে না। তখন এমন হতে পারে, ব্যাংকগুলো আয় বাড়ানোর জন্য ভিন্ন খাতে ঋণ দেবে। রিটেইল খাতে বেশি সুদ পাওয়া গেলে ব্যাংকগুলো সেই খাতে বেশি ঋণ দিতে পারে। এটা যেন না হয়, সেদিকে নজর রাখতে হবে। আবারও বলছি, সরকারের উচিত এটা নিশ্চিত করা যে ব্যাংকগুলো প্রশাসনিক ব্যয় যেন কম রাখে।