ঢাকাTuesday , 17 October 2023

পরীক্ষামূলক সম্প্রচার

পরীক্ষামূলক সম্প্রচার

স্মরণে মাটি ও মানুষের নেতা জাতীয় জননেতা আবদুল মালেক উকিল

Link Copied!

জননেতা আব্দুল মালেক উকিল বাংলাদেশের একজন প্রখ্যাত জাতীয় নেতা ছিলেন। ছাত্রজীবন থেকেই তিনি রাজনীতির সাথে যুক্ত হন এবং ছাত্রনেতা হিসেবে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন, ১৯৫২ ভাষা আন্দোলন ও ৬ দফা আন্দোলনে তিনি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেন। ১৯৫৪ সালে তিনি পার্লামেন্টের সদস্য নির্বাচিত হন এবং আমৃত্যু তিনি এই সদস্যপদে বহাল ছিলেন। তিনি পাকিস্তান আমলে বৃহত্তর নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং সমগ্র বাংলাদেশের একজন তুমুল জনপ্রিয় বক্তা ও নেতা ছিলেন। তিনি এতো জনপ্রিয় বক্তা ছিলেন যে তার বক্তৃতা শুনার জন্য বায়তুল মোকাররম ও পল্টন ময়দান এলাকা জনসমুদ্রে পরিণত হতো। ১৯৭০ নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের পার্লামেন্টারি বোর্ডের একজন বিজ্ঞ মেম্বার এবং ১৯৭৫ থেকে ১৯৮১ পর্যন্ত সভাপতি ছিলেন। ১৯৭১ এর মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে তিনি মুজিবনগর সরকারের উপদেষ্টা ছিলেন। ভারতের আগরতলা, উদয়পুর, চোত্তাখোলা, আসাম, মেঘালয় ও কলকাতা অংশে তিনি মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দান করেন এবং ৯নং সেক্টরে মেজর জলিলকে সেক্টর কমান্ডার হিসেবে শপথ গ্রহণ করান। যুদ্ধ পরবর্তী বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সরকারের সময় শেখ মুজিবর রহমান প্রধানমন্ত্রী থাকা অবস্থায় প্রথমত তিনি স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও পরবর্তীকালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন এবং বঙ্গবন্ধু রাষ্ট্রপতি থাকা অবস্থায় তিনি জাতীয় সংসদের স্পিকার ছিলেন। ১৯৭৫ এর ১৫ই আগস্ট-এর পর মালেক উকিল গ্রেফতার হন। পরবর্তীতে তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করেন। অতঃপর হোটেল ইডেনের সম্মেলনের মাধ্যমে সর্ব সিদ্ধান্তক্রমে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি নিযুক্ত হন। আওয়ামী লীগের সেই দুর্দিনে জিয়াউর রহমানের ঘোষিত মার্শাল ল-এর বিরুদ্ধে তিনি আওয়ামী লীগকে সমগ্র বাংলাদেশে পুনর্গঠিত ও শক্তিশালী করে তোলেন। তাকে দমানোর জন্য এবং আওয়ামী লীগের মধ্যে ভাঙ্গন সৃষ্টির উদ্দেশ্যে জিয়াউর রহমান তাকে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী হওয়ার প্রস্তাব দেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি একান্ত অনুগত ও বিশ্বস্ত হওয়ায় তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেন। এমনকি স্বৈরাচার এরশাদ-ও তাকে প্রধানমন্ত্রীত্ব দিতে চাইলে তিনি আবারও তা প্রত্যাখ্যান করেন। ১৯৮১-এর আওয়ামী লীগের সম্মেলনে যখন জননেত্রী শেখ হাসিনাকে সর্বসম্মতিক্রমে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি মনোনীত করা হয় তখন তিনি ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন এবং ১৭মে শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের দিন মানিক মিয়া এভিনিউতে লক্ষ লক্ষ মানুষের উপস্থিতিতে জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতে সংবর্ধনার মাধ্যমে সভাপতির দায়িত্ব হস্তান্তর করেন। অতঃপর তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়ামের ১নং সদস্য ছিলেন। ১৯৮৪ সালে শেখ হাসিনা যখন বিরোধীদলীয় নেত্রী ছিলেন তখন মালেক উকিল ছিলেন উপনেতা। সমগ্র জীবনে তিনি আইয়ুব, ইয়াহিয়া, নুরুল আমিন, মোনেম খান, ইস্কান্দার মির্জা, জুলফিকার আলী ভুট্টো, জিয়া কিংবা এরশাদ- কারো রক্তচক্ষুকেই আব্দুল মালেক উকিল কখনো তোয়াক্কা করেন নি। পরিশেষে ১৯৮৭ সালের আজকের এই দিনে শহীদ সোহরাওয়ার্দী হসপিটালে তিনি হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করেন।

১৯৭৫ পরবর্তী চরম দুঃসময়ে আওয়ামী লীগকে পুনর্গঠিত করার জন্য ১৯৭৫ থেকে ১৯৮৭ সাল পর্যন্ত সমগ্র বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সফরে এমন একজন মহান নেতার সঙ্গে সফরসঙ্গী হিসেবে থাকতে পেরে নিজেকে আজও অনেক সৌভাগ্যবান মনে করি। আজ তার ৩৬ তম মৃত্যুবার্ষিকীতে তার বিদেহী আত্মার শান্তি কামনায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও জাতীয় শ্রমিক লীগ সহ সকল অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দের প্রতি দোয়া ও শ্রদ্ধাঞ্জলী জ্ঞাপনের একান্ত অনুরোধ রইলো।

বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব তোফায়েল আহমেদ
সিনিয়র সহ-সভাপতি,
জাতীয় শ্রমিক লীগ কেন্দ্রীয় কমিটি
(৩ বারের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক)

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।
এই সপ্তাহের পাঠকপ্রিয়

আজকের সর্বশেষ সবখবর